তুমি চাইলে অক্সিজেনের সাথে করে দিতে পারি আড়ি; কিন্তু প্লিস! গোলাপ চেয়ো না।
রোমিও, জুলিয়েটকে কি দিয়ে প্রেম নিবেদন করেছিলেন? নিশ্চই লাল গোলাপ। ল্যায়লা কে মজনু? তাও নিশ্চই লাল গোলাপই হবে। হির-রঞ্জা, দেবদাস-পাবর্তী, এই সব মহান প্রেমিক থেকে আমাদের বান্টি-বাবলি; প্রেম আছে অথচ লাল গোলাপ নেই।নৈব নৈব চ। কিন্তু এই একবিংশ শতাব্দির নবম বর্ষ সব হিসেবই ওলট পালট করে চলেছে। ভ্যালেন্টাইন ডের বসন্তে গোলাপ হয়ে উঠেছে স্বর্নকমলের মত দুর্লভ। শুধুমাত্র প্রেমিক- প্রেমিকার কাছে নয়, ফুল ব্যাবসাইদের কাছেও গোলাপের সন্ধান নেই। রাজ্যের ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষ্যে প্রায় পঁচিশ লক্ষ্য গোলপ বিক্রির বাজার প্রস্তুত থাকলেও যোগান নেই। অগত্যা চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে লাল গোলাপ। অনেক সময় চড়া দাম দিয়েও নাগালে আসছেনা ‘প্রেমের অমুল্য’ এই বস্তুটি।
বিশেষত লাল গোলাপের আকাল মারাত্মক। অন্যান্ন রঙের গোলাপ আছে, দামেও সস্তা, কিন্তু কি লাভ; এসকিমোর কাছে ফ্রিজ বিক্রি করা কি চারটি খানি কথা। কলকাতার বড় বড় পাইকারি বাজার থেকে খুচরো বাজার, চিত্রটা মোটের উপর একই।
কিছু কুরিয়ার কম্পানি বানিজ্জিক ভাবে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলো ‘ভ্যালেন্টাইনস প্যাকেজের- অর্ডার দিলে, গ্রাহকের প্রেমিক বা প্রেমিকার ঠিকানায় গোলাপের গুচ্ছ পাঠিয়ে দিয়ে চমকে দেবে। গোলাপের দাম ও আকাল দেখে, এখন তারাই চমকেছে সব থেকে বেশি।
লাল গোলাপ বলতে ম্যাটগোট ও মিনিপল প্রজাতির গোলাপকেই বোঝায়। এই গোলাপ গুলি মূলত চাষ হয় মেদিনিপুরের গোসাইবের, কেশাবার, জানাবার, হাওড়ার বাগনান প্রভৃতি অঞ্চলে। রাজ্যের হর্টিকালচার দপ্তরের সাহায্যে চাষিরা এই গোলাপ ফুল রপ্তানি করেন ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বাজারে। এছাড়াও অন্যান্ন প্রজাতির অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের গোলাপ পূঃমেদিনিপুরের পাশকুড়া, নদীয়ার হরিণঘাটার বিভিন্ন গ্রাম থেকে। কিন্তু এই গোলাপের বেশির ভাগটাই রপ্তানি হয়ে যায় বিদেশে।
ফলে এদেশে লেগেছে গোলাপের আকাল।
তাই টেমস নদির ধারে বিল, রোজিকে লাল গোলাপ দিয়ে ‘হ্যাপি ভ্যালেন্টাইনস ডে’ বলতে পারলেও; গঙ্গার পাড়ে বিকেলের সোনালি রোদকে সাক্ষি করে বান্টি-বাবলির হাতে তুলে দিতে পারবেনা লাল গোলাপ।

No comments:
Post a Comment