
‘বিশ্ব ক্যান্সার দিবস' উপলক্ষে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন বিগত ২০০৮ সালে গোটা বিশ্বে ১২ মিলিয়ন বা এক কোটি ২০ লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে বলে তারা খবর পেয়েছেন৷ এসব লোকের মধ্যে ৭৬ লাখ মানুষ আর বেঁচে থাকতে পারেনি৷ যত লোক আক্রান্ত হয়েছে তাদের প্রায় অর্ধেকই উন্নয়শীল বিশ্বের নাগরিক এবং মৃত্যুর মুখে পড়া ক্যান্সার রোগীদের শতকরা প্রায় ৬০ ভাগ লোকও উন্নয়নশীল দেশের৷ পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা না থাকায় এসব দেশগুলোতে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়া মানে মৃত্যুদন্ডের মতই৷
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ডেভিড কের এ ব্যাপারে বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ক্যান্সার এখন একটি সংকটে পরিণত হতে যাচ্ছে – কিন্তু এ বিষয়ে তেমন কোন উচ্চবাচ্য নেই৷ বিষয়টিকে তেমন ভাবে আমলও দেয়া হচ্ছে না৷ তিনি আরো জানান, ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর বেঁচে থাকার হার উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অত্যন্ত কম৷ সচেতনতার অভাব ও ভুল ধারণার কারণে দেখা যায় অনেকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর প্রচলিত চিকিৎসা নেয়ার চেষ্টা করেন৷ এর ফলে ক্যান্সার আরো ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ পেয়ে যায়৷ এক পর্যায়ে ক্যান্সার সারানোর আর কোন সুযোগ থাকে না৷
এক্সিয়স ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে অত্যন্ত ভয়াবহ একটি আশংকার কথা বলা হয়েছে৷ সেটি হচ্ছে – আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে সারা বিশ্বে প্রতি বছর দুই কোটি করে মানুষের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ সেক্ষেত্রে প্রতি বছর মারা যাবে এক কোটি ৩০ লাখ মানুষ৷
বড়লোকের অসুখ এখন গরীবদের মধ্যে
এক সময় ক্যান্সার ছিলো বড়লোকের অসুখ, কিন্ত এখন সেটি গরিবদের মধ্যেও খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে৷ এর কারণ কি? তা অনুসন্ধান করতে গিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে এর একটি কারণ হচ্ছে মানুষ আগের চেয়ে বেশী দিন বেঁচে থাকছে৷ ফলে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে৷ অন্যটি হচ্ছে আধুনিক জীবনযাত্রা৷ ধুমপান, মদ্যপান ছাড়াও যান্ত্রিকতা বেড়ে চলায় এখন মানুষ দৈহিক পরিশ্রম কম করে৷ একদিকে উচ্চ মাত্রার চর্বি ও চিনি যুক্ত খাবার বেশী খাচ্ছে অপরদিকে আঁশযুক্ত খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিচ্ছে৷ এছাড়া এইডস এর ভাইরাস এইচআইভি আক্রান্ত রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তারাও সহজে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়৷
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী মধ্য ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে নারী ও পুরুষদের মধ্যে পাকস্থলীর ক্যান্সার দেখা যায়৷ এছাড়া পুরুষরা ফুসফুস ও কিডনীতে এবং নারীরা স্তন এবং গর্ভাশয়ে ক্যন্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকে৷ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নিয়মিত মেডিকেল পরীক্ষা সহ প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা না থাকায় ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীরা প্রাথমিকভাবে তাদের রোগ ধরতে পারেন না৷
Please visit vinnobasar sponsorer:
Taking care of your parents in Kolkata
No comments:
Post a Comment