
জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন সারা বিশ্বে নারী নির্যাতন বন্ধে সবাইকে আরো জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন ৷ তিনি বলেন আমাদের উচিত অন্যায় ও নির্যাতনকে মেনে নেয়ার মানসিকতা পরিবর্তন করা উচিত্ ৷
জাতিসংঘের নারীর প্রতি সহিংসতা নির্মূল বিষয়ে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে দেয়া ভাষণে বান এই মন্তব্য করেন৷
জীবনের সব ক্ষেত্রেই পুরুষের পাশাপাশি নারীর অবদান আজ স্বীকৃত৷ ঘরে বাইরে তো বটেই মহাকাশেও পৌঁছেছে নারীরা৷ কিন্তু তারপরও নারীর প্রতি সহিংসতা কিংবা নির্যাতন বন্ধ হয় নি আজও৷
জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন বলেন জাতিসংঘের হিসেবে, বিশ্বে প্রতি তিনজন নারীর একজন জীবনে কোন না কোন সময় মারধোর, জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ক স্থাপন কিংবা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে৷ প্রতি ৫ জনের একজন শিকার হচ্ছে ধর্ষণ কিংবা ধর্ষণের চেষ্টার৷ বিশ্বব্যাপী পাচার হওয়া মানুষদের ৮০ শতাংশেরও বেশি নারী৷ প্রজনন অঙ্গচ্ছেদের শিকার ১৩ কোটি নারী৷ শুধু তাই নয়, বিশ্বে খুন হওয়া নারীদের অর্ধেকই প্রাণ হারিয়েছে তাদের সঙ্গীর হাতে৷
এই বাস্তবতায় পালন করা হলো নারীর প্রতি সহিংসতা নির্মূল বিষয়ে আন্তর্জাতিক দিবস৷ জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন বলেছেন, এ ধরনের সহিংসতা গোটা সমাজেরই উন্নয়ন, শান্তি এবং নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করছে৷ আর এই অন্যায় রোধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং শাস্তি এড়ানোর পথ বন্ধ করার উপর জোর দিয়েছেন তিনি৷ নারীর প্রতি সহিংসতাকে খাটো করে দেখা, একে মেনে নেয়া কিংবা ক্ষমা করে দেয়ার মানসিকতার বিরুদ্ধে লড়াইয়েরও আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব৷
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ন্যাভি পিল্লায় এক বিবৃতিতে, বিশ্বব্যাপী নারীর প্রতি সহিংসতাকে বড় সমস্যা উল্লেখ করে বলেছেন, গত এক দশকে গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গোতে লাখ লাখ নারী ধর্ষণ ও দাসত্বের শিকার কিংবা খুন হয়েছে৷ কিন্তু অপরাধীদের খুব কমই সাজা ভোগ করেছে৷ পিল্লায় গভীর উদ্বেগের সাথে জানিয়েছেন, কোন কোন সমাজে পুরুষরা সম্পূর্ণভাবে সচেতন যে তারা যদি স্ত্রী অথবা কন্যাকে মারধোর করে এমনকি হত্যাও করে, সেজন্য তাদের কখনোই আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে না৷
সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থার এক রিপোর্টে দেখা গেছে, শারীরিক এবং যৌন নির্যাতনের শিকার নারীদের অধিকাংশই গর্ভকালীন জটিলতা এমনকি গর্ভপাত এবং শারীরিক নানা সমস্যা ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যথায় ভোগে৷ নির্যাতন থেকে বাঁচতে অনেক নারীই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়৷
তাই জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন বলেছেন, নারীর প্রতি সহিংসতা কোন দেশ, সংস্কৃতি এবং সমাজেই কোন অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ তাই প্রত্যেক দেশকে তাদের নিজস্ব কৌশলে এটি প্রতিরোধ করতে হবে৷
Please visit vinnobasar sponsorer: