
প্রথম প্রচেষ্টার পর সাড়ে তিন বছর পেরিয়ে গেছে৷ এ বছরের নভেম্বরে ইউএসএ নতুন করে এটি উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ প্রাথমিকভাবে ২০০৫ সালের অক্টোবরে এটি কক্ষপথে উৎক্ষেপণের কথা ছিল৷
এ উপগ্রহের লক্ষ্য হচ্ছে মেরু অঞ্চলে বরফ জমার সূক্ষ পরিমাপ বের করা৷ এছাড়া এর মাধ্যমে উত্তর ও দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে বিশ্ব উষ্ণতার প্রভাব পরিমাপ করা হবে৷ ক্রায়োস্যাট – ২ নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে যাত্রা শুরু করে ৭১৭ কিলোমিটার কৌণিক দূরত্বে পৃথিবীকে ৪২ মাস প্রদক্ষিণ করবে৷ এর মাধ্যমে এখন পর্যন্ত মেরু অঞ্চলের না পাওয়া ছবি ও পরিমাপ পাওয়া সম্ভব হবে৷ এ উপগ্রহটিতে বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় ক্ষমতাসম্পন্ন দু'টি এ্যান্টেনা থাকবে যা মানব চক্ষুর মতো মেরু অঞ্চলের বরফ এর ফলে উভয় মেরুতে সমুদ্র পৃষ্ঠে বরফের আস্তরণের পুরুত্ব এবং এক বছর থেকে পরের বছরে এর উপরিতলে সামান্য পরিবর্তনও নির্ণয় করা সম্ভব হবে৷
ইতিমধ্যে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাসের পদ্ধতি কেমন হওয়া উচিত – এ বিষয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে৷ ভূ-পৃষ্ঠে বরফ গলে যাওয়া বিষয়ে জানা গেছে অনেক নতুন তথ্য৷ উত্তর মেরুর জীবন সম্পর্কে এখন পর্যন্ত করা সবচেয়ে সমন্বিত গবেষণা প্রতিবেদনটি আর্কটিক ওশান ডাইভার্সিটি নামক একটি সংস্থা গত মাসে প্রকাশ করে৷ এ গবেষণায় দেখা গেছে, আগে যেসব কঠিন খোলস বিশিষ্ট জলজ প্রাণী নরওয়ের স্ভালবার্ড দ্বীপের শীতল পানিতে বাস করতো তারা মেরুর দিকে চলে যাচ্ছে৷ কারণ হিসেবে দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঐ অঞ্চলের পানি উষ্ণ হয়ে গেছে এবং তা এসব প্রাণীর বাস উপযোগী আর নেই৷
সকল নতুন তথ্য-উপাত্ত সত্ত্বেও ইএসএ বিশ্বাস করে যে ক্রায়োস্যাটের অভিযান এখনও খুব প্রয়োজনীয়৷ ক্রায়োস্যাট অভিযাত্রার বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা এবং জার্মান আলফ্রেড ভেগেন্যার ইন্সটিটিউট এর তুষারবিশারদ ডানিয়েল স্টাইনহাগে বার্তা সংস্থা আইপিএসকে বলেন, বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং বরফ গলে যাওয়ার বিষয়ে আমাদের জ্ঞানভান্ডার বেশ সমৃদ্ধ হয়েছে৷ তবু ক্রায়োস্যাট-এ ব্যবহৃত প্রযুক্তির সাহায্যে উভয় মেরুতে বরফের আয়তন পরিবর্তনের সবচেয়ে সঠিক পরিমাপ পাওয়া যাবে৷ তবে তিনি স্বীকার করেন, যে এ বছর ৭ থেকে ১৮ ডিসেম্বর কোপেনহাগেনে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলনে কাজে লাগানোর জন্য সঠিক সময়ে ক্রায়োস্যাটের মাধ্যমে তথ্য পাওয়া যাবে না৷ এ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে কিয়োটো প্রোটোকলের বদলে একটি নতুন আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার আশা করা হচ্ছে৷ কারণ কিয়োটো প্রোটোকলের মেয়াদ ২০১২ সালে শেষ হচ্ছে৷
No comments:
Post a Comment