
“সি পি এমকে হঠাতে মানুষ কে সঙ্গে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ুন”। এই স্লোগানকে সামনে রেখে কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের শ্যামবাজার অঞ্চলে যৌথ কর্মী সভা করলো কংগ্রেস ও তৃনমূল কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ।শ্যামবাজার হাই স্কুলে অনুষ্ঠিত এই কর্মী সভায় উপস্থিত ছিলেন উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুদীপ বন্দোপ্যাধ্যায়।প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ ছাত্র পরিষদের সাধারন সম্পাদক ও মুখপাত্র স্বরূপ বোস ও পঃবঃ কিষান কংগ্রেস চেয়ারম্যান দেবাশিষ দত্ত।।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা তৃনমূল কংগ্রেস সভাপতি বিধায়ক তারক বন্দোপাধ্যায়।
আনুষ্ঠানিক ভাবে সভা শুরু হয় ৭.৩০মিনিটে।কলকাতা পৌরসভার ১০নং ওয়ার্ডের তৃনমূল নেতা সন্দিপন বিশ্বাস,যুব তৃনমূল কং নেতা লক্ষী সামন্ত,কং নেতা ধীরেন ঘোষ,সমীর মূখার্জ্জী,স্বপন কুন্ডু,স্বরূপ বোস প্রমুখ কংগ্রেস ও তৃনমূল কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দ যৌথ ভাবে মিছিলের মাধ্যমে সভাস্থলে উপস্থিত হন।সভার পরিবেশ হয়ে ওঠে আবেগ ঘন।যেনো বহুদিন পর স্বজনকে আবার কাছে পাওয়ার আনন্দ।এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কংগ্রেস নেতা সুদীন ভট্টাচার্য্যর নাম প্রস্তাব করেন সুদীপের ঘনিষ্ঠ তৃনমূল নেতা সন্দিপন বিশ্বাস।এরপর একে একে বক্তব্য পেশ করেন কংগ্রেস ও তৃনমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতারা। ছাত্রপরিষদের সাধারন সম্পাদক ও মুখপাত্র স্বরূপ বোস তার বক্তব্যে বলেন-‘খাতায় কলমে জোট নয়। সাবির্ক ও সামগ্রিক ভাবে দৃষ্টান্তমূলক জোট বদ্ধ হওয়ার চ্যালেঞ্জ এখন আমাদের সামনে।আমরা এই চ্যালেঞ্জে জয়লাভ করবই’।স্বরূপ বাবু তার বক্তব্যে তীব্রভাবে কটাক্ষ করেন মহঃ সেলিম কে। তিনি বলেন-‘সেলিম ধমর্নিরপেক্ষতার ছদ্দবেশ ধরে ভোটের বাজার বাজিমাত করতে চাইছে।হিন্দু অধু্ষিত এলাকায় লিখছে কমরেড সেলিম।মুসলিম ভাইদের কাছে ভোট চাইছে মহম্মদ সেলিম নাম প্রচার করে।‘ গত পাঁচ বছরে সেলিম জন প্রতিনিধীর দ্বায়িত্ব পালন করতে সঠিক ভাবে পারেনি বলে মন্তব্য করেন স্বরূপ বাবু। তার বক্তব্য ভোটের সময় ভোটারদের কাছে ১২টি মোবাইল ফোন নম্বর বিলি করেছিলেন সেলিম। ভোটের পর একটির ও অস্থিত্ব নেই। তিনি বলেন উত্তর পূর্ব লোকসভার মানুষ তাকে "মোবাইল সেলিম" বলে।
প্রার্থী সুদীপ বন্দোপাধ্যায় তার বক্তব্যে কর্মীদের উৎসাহ দানের সাথে সাথে ভোটের অঙ্কের হিসেব তুলে ধরেন।সুদীপ বাবুর বক্তব্য যেহেতু ডিলি মিটেশনের পর কেন্দ্রটি ভেঙে নতুন ভাবে তৈরী হয়েছে তাই এবারের প্রচারে কর্মীদের আরো অনেক গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা গ্রহন করতে হবে।উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পরছে ৬২টি ওয়ার্ড।প্রতিটি ওয়ার্ডে মানুষকে বোঝানোর দ্বায়িত্ব নিতে হবে সমস্ত কর্মীদের। ১৪ লক্ষ নতুন ভোটার। এদের প্রত্যেকের কাছে গিয়ে বোঝাতে হবে কেন তৃণমূল জোটকে ভোট দেবেন মানুষ।
কর্মীসভার এই সম্মেলনটি ছিল আপাদ মস্তক আবেগঘন । বহুদিন পর পুরান সাথিদের সাথে একই মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আবেগ প্রবন হয়ে পরেন অনেক নেতাই।
প্রাক ভোট পর্বের জোট পন্থি ও জোট বিরোধী এরকম দ্বিধা বিভক্ত মহল এখন কমির্সভা গুলিতে মিলিত হয়ে যেন আবেগের তাড়নায় মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছেন। কংগ্রেস ও তৃনমূলের কমীর্সভা গুলি মনে করিয়ে দিচ্ছে মানিক বন্দোপাধ্যায়ের বেড়া গল্পটাকে। যেখানে দুই ভাইয়ের পৃথক সংসারের বিভেদ সৃষ্টিকারি বেড়াটি কোনও এক কালবৈশাখির ঝড়ে ভেঙে যাওয়ার পর নিজের অজান্তেই ভিন্ন দুই পরিবার হয়ে উঠলো আবার একান্নবর্তি পরিবারে।
কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের বতর্মান কমির্সভা গুলি এরকম কথাই মনে করিয়ে চলেছে।