Friday, April 17, 2009

সি.পি.এম পার্টি ক্যাডার শিক্ষকের কাছে প্রাথমিক শিক্ষায় আমাদের শিশুরা আর কতদিন শিখবে A B C D ঙ............।

ভাস্কর ব্যানার্জী, কলকাতা,১৭ই এপ্রিল'০৯
“মাতৃ ভাষা মাতৃদুগ্ধ’ অবশ্যই। কিন্তু শুধু এই তত্বের জোরে শিক্ষা ব্যবস্থার ভিত্তি প্রতিষ্টিত করা যায় না। করলে যে ফলাফল হয় তা আজ পশ্চি্মবঙ্গের চোখের সামনে। গোটা একটা প্রজন্ম দুগ্ধ পোষ্য হয়ে বসে আছে বাংলা মায়ের কোল ‘আলোকিত’ করে । ক্লাস সিক্সে এ.বি.সি.ডি পড়া এই বঙ্গ সন্তানরা চোখের সামনে দেখেছে আই.টি,কলসেন্টার কিন্তু সেখানে প্রবেশ করে চাকরী পাওয়ার পথ রাজ্য সরকারের কল্যানে তারা হারিয়ে ফেলেছে শৈশবে। গ্লোবাল ভিলেজের যুগে তাদের চাকরী পাওয়ার চাবি কাঠি হারিয়ে গেছে ‘মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধের’ গোলক ধাঁধায়।
একটা জীবনমৃত প্রজন্মের লাসের উপর দাঁড়িয়ে তিরিশ উদ্ধ সিপি আই(এম) সরকার আজ বুঝেছেন ‘মাতৃভাষা মাতৃদুগদ্ধ’ হলেও বহুভাষী এই বিশ্বে অন্য ভাষা শিক্ষা প্রয়োজন। প্রাথমিক স্তর থেকে শুরু হয়েছে ইংরেজি শিক্ষাদানের কমর্সুচি। ব্রিটিশ কাউনসিল এবং অন্যন্ন ইংরেজি শিক্ষা দান কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করে প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষন দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
সাধু উদ্যেশ্য। তবে এখানেও একটা গলত চোখে বিঁধে চলেছে ক্রমাগত। গলতটি চিরাচরিত ক্যাডার রাজ। পার্টির সৌজন্যে প্রাথমিক স্কুলে চাকরী পাওয়ার লোকের সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত। ‘শিক্ষক হওয়ার বায়োডাটায়’ কিছু গুন থাক না থাক কমরেড ভূষনে ভূষিত থাকার যোগ্যতা অবস্যই এদের থাকতে হবে’। এটাই যেনো এখন প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক হওয়ার ‘প্রাথমিক ও সবর্শেষ গুনাবলি’।
এই তথ্যের প্রমান আছে ভুরিভুরি। চোখের সামনেই দেখা যায় কমরেডের অথর্নৈতীক নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য তার নেতারা কি ভাবে তাদের পাইয়ে দেন প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরী। কলকাতা অঞ্চলের ঘটনা এক ভিন্নরাজ্যের ছেলে ক্লাববাজি করে দিন কাটাতো। গত বিধান সভায় ভোটের সময় সে যোগ দেয় সিপি আই (এম) দলে ( সে দলের সদস্য বা CM নয়) । ভোটের পর সে পার্টির দয়ায় পায় ইট,বালি,সিমেন্টের সাপ্লাইয়ের কাজ। এখান থেকে অর্থ সংগ্রহ করে কন্ট্রাক্টারি। কিন্তু ব্যাবসায় টাকা যেমন ঝুঁকিও তেমন।নেতার হাতে পায়ে ধরে প্রথমে ঢোকে স্থানীয় এক স্কুলে প্যারা টিচারের কাজে। কিন্তু মাইনে কম। তাই আবার নেতার হাতে ধরা। অ্যাপলাই করে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক পদে, কিন্তু ভাঙা ভাঙা বাংলায় ভাষা-শিক্ষকের চাকরী মেলে কি ভাবে?
কেনো,নেতাজি হ্যায় না।
নেতার পরামর্শে জেনে নেয় ইন্টারভিউ বোর্ডে কে কে আছে। তার মধ্যে কার বাড়ী এই জোনাল কমিটির মধ্যে। ব্যাস কেল্লা ফতে একদিন সকালে তার বাড়িতে নেতার চিঠি নিয়ে হাজির। কার্যত ইন্টার ভিউ সেখানেই শেষ।
চাকরী তো মেলে, কিন্তু দলবাজী করে কাজ কি ভাবে চলে। ভাঙা ভাঙা বাংলায় কি করে ছাত্রদের স্পষ্ট উচ্চারন করতে শেখায়। বাংলা টিচার ‘সাউ’ এখন স্কুলের জানলা দিয়ে বাংলার আকাশ দেখে বাংলা শেখায়। আর ছাত্র ছাত্রীরা কাটাকুটি খেলে বাংলা শেখে।
এই ঘটনাটা যদি বিচ্ছিন্য হয়;তাহলে আপনার জানা ঘটনার সাথে যুক্ত হয়ে এটা স্বাভাবিক রেওয়াজে পরিনত হলো। আমাদের সবার জানা এরকম এক একটা ঘটনা প্রমানিত করছে এরকমই চলছে ‘হালহকিকত’।
বেশ চলছিলো তবে সমস্যা বাড়ালো ব্রিটিশ কাউন্সিল। ব্রিটিশ কাউন্সিলের ট্রেনিং নিতে যাওয়া প্রাথমিক শিক্ষকরা এখন চুড়ান্ত ভাবে অপমানিত। ব্রিটিশ কাউন্সিলের দেওয়া ট্রেনিং থেকে ‘A.B.C.D.ঙ’ তারা কি ভাবে শিখলো তা বুঝে উঠতে পারছেনা রাজ্য সরকার। স্কুলে ডেমষ্ট্রশন দেওয়ার কথা ছিলো এদের, সে ডেট এরা ক্রমাগত পেছচ্ছেন ‘পেট খারাপের অজুহাতে’।
বুদ্ধবাবু আপনার স্বপ্ন হয়তো একদিন সফল হবেই। কিন্তু ‘দিল্লি’ বহু দূর। যে রাজ্যবাসীকে আপনি বিশ্বমানের চাকরী দিয়ে সুখি প্রজন্ম বানাতে চাইছেন। তারা যে,এই সব ঘুনে ধরা শিক্ষকদের কাছে শিক্ষা নিয়ে ‘A.B.C.D.ঙ’ ছাড়া কিছুই বলতে পারেনা।
রাজ্যে স্কুলের হাল..............-

১৮% স্কুলের কোনও ঘর নেই
১৮% স্কুলের একটি করে ঘর
৩৬% স্কুলের শুধু নাম আছে বাস্তবে নেই।
৫০% স্কুলে বড়জোর দুজন শিক্ষক।
প্রাথমিক ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যায় রাজ্য দেশের মধ্যে ১৪ নং স্থানে।

No comments:

Post a Comment