
ভাস্কর ব্যানার্জী,কলকাতা,১৮ই এপ্রিল'০৯
সেলিমের ‘জয় হো’ পোস্টার নিয়ে সি পি আই(এম) দলে মতবিরোধ ছিলো। প্রার্থীর ছবি দিয়ে ভোট চাওয়া এ দলের রেওয়াজ নয়। ব্যক্তির থেকে দল বড়। এই নীতি নিয়েই নিজেদের ব্যক্তিত্বকে এতদিন পর্যালোচনা করে এসেছেন কমরেডরা। সে ধারনায় প্রথম বড় ধাক্কা দিলেন মহঃ সেলিম। উত্তর কলকাতায় সেলিমের নিবার্চনী কেন্দ্রে সেলিমের ছবি দিয়ে বানানো পোস্টার দলের অমত সত্বেও রয়েছে বহাল তবিয়তে। জয় হো লেখা হোডিং না থাকলেও দখিন ভারতীয় কায়দায় বড় বড় কাট আউটে নিজেদের নির্বাচনী কেন্দ্র সাজিয়েছেন তড়িৎ-অমিতাভরা। ৩৪ নং জাতীয় সড়কের দু’পাশে শোভা বর্ধন করছে তড়িৎ বাবুর ছবি দেওয়া বড় বড় কাট আউট। যেখানে সোনিয়া রাহুল মমতার কাট আউট থাকলেও তা চোখে পড়ছে না। তড়িৎ বাবুর কাট আউট এ তাকে পরিস্কার ভাবে দেখা গেলেও তার দলের প্রতিক চিহ্ন কে খুঁজতে প্রয়োজন মাইক্রোস্কোপ।
অমিতাভ বাবু কম যায় কিসে??সুভাষ বাবুর মতো
“মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক,
আমি তোমাদেরই লোক”।
স্লোগান না থাকলেও রয়েছে অমিতাভ বাবুর বড় বড় ব্যানার হোর্ডিং এ ব্যবহার করা হয়েছে তার ছবি। কোথাও কোথাও বড় বড় দেওয়ালে অয়েল পেন্ট করা বাবু অমিতাভ নন্দির ফটো।
সেলিমের আবার নব সংযোজন নতুন কিছু পোস্টার যার তলায় সৌজন্য কথাটি ব্যবহার করে রাম,শ্যাম,যদু,মধুর নাম। এই সৌজন্য দেখিয়ে পোস্টার বানানোর রেওয়াজ এতদিন ছিলো কংগ্রেস বা তৃনমূলে। সেলিম সাহেবের হাত ধরে এবার এই রেওয়াজ আমদানি হলো প্লোরেতারিয়তের এই দলে। সৌজন্যে যারা সেলিম সাহেবের পোস্টার ছাপিয়েছেন তারা সেলিম বাবুর ব্যবসাই বন্ধু-বান্ধব। নিজেদের নাম প্রকাশের সাথে সাথে এরা ছাপিয়েছেন নিজেদের ছবিও।
এদের ‘কর্মকান্ড, সংসদীয় নিষ্ঠা’ দেখে প্রথমে এদের কে মনোনয়ন দিতে রাজি ছিলো না সি.পি.আই(এম) রাজ্য কমিটির এর এক অংশ। কিন্তু কোনও এক অদৃশ্য বল-এ কল-কাঠি নাড়িয়ে এরা জায়গা করে নিয়েছে সি.পি.আই(এম)-এর লোকসভা প্রার্থী তালিকায়। তারপর থেকেই এরা কার্যত “বাগি” হয়ে উঠেছে। প্রথম প্রথম বিমান বাবু এদের সংযত করার চেষ্টা করলেও এখন হাল ছেড়ে দিয়েছেন বলেই মনে হয়। কারন ‘জয় হো’ পোষ্টার বিতর্কের পরেও সেলিম ওই পোষ্টার না খোলায় তিনি কোনও রকম বাদানুবাদে যাননি। বিমান বাবুর অবস্থা কেমন যেন ‘ভিস্ম পিতামহের’ মতো করুন।
তাই বোধহয় আরো বাড়াবাড়ি শুরু করে ফেলছেন এরা। বিশেষ করে সি.পি.আই(এম)-এর ‘বাগি সাহেজাদা সেলিম’। সেলিম ছাত্রাবস্থা থেকে মার্কসিয় আদর্শে বিশ্বাসি হলেও ভোটের বাজার দখলের তাগিদে হনুমান মন্দিরের চরনামৃত খাওয়া থেকে জুম্মা বারে মনোনয়ন জমা দেওয়া কিছুই বাদ দেননি সেলিম।
কংগ্রেসের সাথে চার বছর কেন্দ্রীয় সরকারে হানিমুন করেছে সি পি এম। সেখান থেকেই কি এ ছোঁয়াচে রোগ ধরলো সি পি এমে। কারন সৌজন্যে পোস্টার ছাপিয়ে নিজের নাম বকলমে প্রচার করা এতদিন দেখা যেতো কংগ্রেস রাজনিতীতেই। এবার সেলিম সাহেবের হাত ধরে তা আমদানি হল এ রাজ্যে।
কি বলেন বিমান,বিনয়,বুদ্ধ ত্রয়ীরা ???
প্রকাশ বাবু,আপনি কি ভাবছেন???